Responsive Advertisement

Top News

এখনো নসরুল হামিদের কবজায় তানাকা গ্রুপ


 তানাকা গ্রুপ অব কোম্পানির কর্ণধার মহিউদ্দিন মাহিন। তিনি ২০০৯ সালের দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির নেতা ছিলেন। দলটির কেন্দ্রীয় অনেক নেতার সঙ্গেও পরিচয় ছিল স্বনামধন্য এ ব্যবসায়ীর।

সে সময় আওয়ামী লীগের হাতে ক্ষমতা যাওয়ায় মাহিনের সম্পদের ওপর কুনজর পড়ে দলটির নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদের। তারা দু’জনে একে একে দখল করেন সবকিছু। পেছন থেকে তাদের সহায়তা করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। জুলাই বিপ্লবের পরও সব সম্পদ ও কলকারখানা ফিরে পাননি ভুক্তভোগী শিল্পপতি।



জানা গেছে, তানাকা গ্রুপের কর্ণধার মাহিনের জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল তার রাজনৈতিক পরিচয়। তিনি বিএনপিকে অর্থায়ন করেন, লন্ডনে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছেও টাকা পাঠান বলে অভিযোগ তোলে বিপু-শাহিনচক্র। এই অজুহাত দেখিয়ে একের পর এক স্থাপনা ও সম্পদ কবজা করে তারা। হাতিয়েছে হাজার কোটি টাকা। এই চক্রের কালো থাবায় বন্ধ হয়ে যায় তানাকা গ্রুপের সিএনজি স্টেশন ও পেট্রোল পাম্প, পেপার মিল, স্পিনিং মিল, সুতার ফ্যাক্টরি, গার্মেন্ট ফ্যাক্টরিসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান। বেদখল হয়ে যায় হাউজিং কোম্পানি, ফলের বাগান ও নির্মাণাধীন প্রাইভেট হাসপাতালের ভবনসহ জমি।


ব্যবসায়ী মাহিন আমার দেশকে বলেন, ২০০৩ সালে কেরানীগঞ্জের কদমতলী গোল চত্বরে সড়ক ও জনপথের ২৯ শতাংশ ভূমি লিজ নিয়ে নির্মাণ করেন তানাকা সিএনজি অ্যান্ড পেট্রোল পাম্প। যা স্থাপনে নিজস্ব অর্থায়ন ও ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে ব্যয় হয় আট কোটি টাকা। ২০১৭ সালে বিপু ও শাহিন দাঁড়িয়ে থেকে ছাত্রলীগ, যুবলীগের শতাধিক ক্যাডার দিয়ে সেই স্থাপনাটি ভেঙে ফেলেন। লুট করা হয় সিএনজি মেশিন, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, ভবনের আসবাবপত্র ও ক্যাশের টাকা। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও ভবনটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।

তিনি আরো বলেন, ২০১৪ সালে সাভারের রাজাসন এলাকায় ৪০ বিঘা জমির ওপর নির্মাণ করা হয়েছিল তানাকা সুইচ কোয়ালিটি পেপার বিডি লিমিটেড। সেটিও ২০১৬ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়। তালা মেরে দেওয়া হয় সাভারে ৩০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত মারহাবা স্পিনিং মিলস লিমিটেড নামে সুতার কারখানাটি। ১৯৯২ সালে এই ফ্যাক্টরি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। গাজীপুরের কাশিমপুরে ২০ বিঘা জমির উপর ১৯৯৮ সালে জাপানি ও জার্মানির মেশিনারিজ দিয়ে মাইডাস ইন্ডাস্ট্রি অ্যান্ড ডাইং সুতার ফ্যাক্টরি শুরু করে তানাকা গ্রুপ। এটিও বন্ধ করে দেওয়া হয় ২০১৬ সালে। এর মাধ্যমে তিনি ক্ষতিগ্রস্ত হন প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার উপরে।

শুধু বিএনপি সংশ্লিষ্টতার কারণে রোষানলে পড়ার দাবি করে মাহিন বলেন, ঢাকার সেগুনবাগিচায়, ওয়ারী, কেরানীগঞ্জের আগানগর, সোনাকান্দা বিসিক শিল্পনগরীতে প্রতিষ্ঠিত ছিল তানাকা গার্মেন্টস ও হাউজিং প্রজেক্ট। ধলেশ্বরী তীরে সোনাকান্দা মৌজায় ছিল ১৫ বিঘা জমির উপর ফলের বাগান। কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পাশে নির্মাণাধীন ছিল ১৬ তলা ভবন বিশিষ্ট প্রাইভেট হাসপাতাল। এসব যেন এখন স্মৃতি। সবই দখল হয়ে গেছে। দখল করে নিয়েছে। এসব দখল কারবারে সহযোগিতা করেছেন সালমান এফ রহমান। তিনি ছিলেন এই দস্যুদের জন্য পাহাড়সম শক্তি।

তিনি জানান, গত বছরের ৫ আগস্টের পর কিছু সম্পদ ফেরত পেয়েছেন মাহিন, যার মধ্যে কেরানীগঞ্জে তানাকা পেট্রোল পাম্প অন্যতম। তবে পাম্পের জমি অনেকটা সড়কে চলে গেছে। কিছুটা রয়েছে অন্যের দখলে। এছাড়া বন্ধ হওয়া কলকারখানা প্রশাসনের সহযোগিতায় কিছু কিছু উদ্ধার হলেও অর্থের অভাবে এখনো চালু করতে পারেননি । বিসিক শিল্প নগরীর পাশে সোনাকান্দা মৌজায় ১৫ বিঘা জমির উপর ফলের বাগান শাহিন চেয়ারম্যান দখল করে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের নামে দলীয় নাম জারি করেছেন, যা এখনো উদ্ধার হয়নি।


আপনাদের কাছে 

Post a Comment

Previous Post Next Post